রামু উপজেলা আয়তন: ৩৯১.৭১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°১৭´ থেকে ২১°৩৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°০০´ থেকে ৯২°১৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে চকোরিয়া ও কক্সবাজার সদর উপজেলা, দক্ষিণে নাইক্ষ্যংছড়ি ও উখিয়া উপজেলা, পূর্বে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা, পশ্চিমে কক্সবাজার সদর উপজেলা ও বঙ্গোপসাগর।
জনসংখ্যা ২০২৬৮৩; পুরুষ ১০৪১৭২, মহিলা ৯৮৫১১। মুসলিম ১৮৬০১৯, হিন্দু ৮১৮৮, বৌদ্ধ ৮৬, খ্রিস্টান ৮১৮২ এবং অন্যান্য ২০৮।

জলাশয় প্রধান নদী: বাঁকখালী।
প্রশাসন রামু থানা গঠিত হয় ১৯০৮ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
তথ্যঃ

রামু উপজেলা আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১,
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ রামকোট হিন্দু মন্দির ও বৌদ্ধ কেয়াং, লামারপাড়া বৌদ্ধ কেয়াং।
ঐতিহাসিক ঘটনাবলি আরাকানের রাম রাজবংশের নামে এই এলাকার রামু নামকরণ হয় বলে জনশ্রুতি আছে। মুগলদের চট্টগ্রাম বিজয়কালে (১৬৬৬) রামুতে বুদ্ধের ১৩ ফুট উঁচু একটি ব্রোঞ্জমূর্তি পাওয়া যায়। এটিই বাংলাদেশে উদ্ধারকৃত সর্ববৃহৎ বুদ্ধমূর্তি। কথিত আছে, রামকোটে অপহূতা সীতার সঙ্গে রামচন্দ্রের মিলন ঘটে এবং সেখানে একসময় সীতার ব্যবহূত শিলপাটা রক্ষিত ছিল।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৮২, মন্দির ১৬, কেয়াং ও প্যাগোডা ২০। উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান: রামু জামে মসজিদ, ঈদগড় বাজার মসজিদ, রামকোট হিন্দু মন্দির, শ্রী শ্রী রামদেবীর পূণ্যমন্দির, রামকোট বৌদ্ধ কেয়াং, লামারপাড়া বৌদ্ধ কেয়াং।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ২৬.০%; পুরুষ ২৯.৬%, মহিলা ২২.৩%। কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮২, কিন্ডার গার্টেন ৬, মাদ্রাসা ১৯। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: রামু খিজারী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ১৪, লাইব্রেরি ২, সাংস্কৃতিক সংগঠন ২, খেলার মাঠ ১৩, মহিলা সংগঠন ৭।
দর্শনীয় স্থান রামকোট (হিন্দু ও বৌদ্ধ তীর্থস্থান), রাবার বাগান, থোয়াইংগা চৌধুরী কেয়াং (লামারপাড়া)।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪৭.০১%, অকৃষি শ্রমিক ১২.৫২%, শিল্প ০.৮২% ব্যবসা ১৩.০৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৯৯%, চাকরি ৫.১০%, নির্মাণ ১.১০%, ধর্মীয় সেবা ০.২৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৭৫% এবং অন্যান্য ১৬.৪০%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৩৩.৪১%, ভূমিহীন ৬৬.৫৯%। শহরে ৩২.৬৭% এবং গ্রামে ৩৭.৪৬% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, ডাল, পিঁয়াজ, রসুন, আদা, পান, সুপারি, রাবার, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আখ, তিল, তিসি, সরিষা, তুলা, পাট।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, আনারস, কলা, পেঁপে, নারিকেল।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১৫, গবাদিপশু ২, হাঁস-মুরগি ৮, হ্যাচারি ১০।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৬৬ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১১৪ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫১২ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি, পাল্কি।
শিল্প ও কলকারখানা ধানকল, আটাকল, বরফকল, করাতকল, ওয়েল্ডিং কারখানা।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, তাঁতশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, কাঁসাশিল্প, পিতলশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ, কাঠের কাজ, সেলাই কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩২, মেলা ২। রামু বাজার, কলঘর বাজার, কাউয়ার খোপ বাজার, পানিরছড়া বাজার, গর্জনিয়া বাজার, ঈদগড় বাজার, জোয়ারিয়ানালা বাজার, ফকিরহাট বাজার এবং রামকোট মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য পান, সুপারি, নারিকেল, কলা, পেঁপে, কাঁঠাল, আনারস, চিংড়ি, রাবার।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৭.৯১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮৯.০২%, পুকুর ১.৯০%, ট্যাপ ০.৫১% এবং অন্যান্য ৭.৬৫%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২০.৮৮% (গ্রামে ১৬.০৯% এবং শহরে ৪৬.০৭%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৪.১২% (গ্রামে ৫৭.৪৫% এবং শহরে ৩৬.৫৮%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩৮.৯৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৯, ক্লিনিক ২।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৯১ সালের ঝড়ে এ উপজেলার অনেক লোকের প্রাণহানি ঘটে এবং ঘড়বাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।

আরও দেখুনঃ
পেকুয়া উপজেলা | কক্সবাজার জেলা | চট্টগ্রাম বিভাগ | বাংলাদেশ